কিডনির পয়েন্ট কত হলে খারাপ - কিডনির পয়েন্ট কত হলে স্বাভাবিক

কিডনির পয়েন্ট কত হলে খারাপ - কিডনির পয়েন্ট কত হলে স্বাভাবিক এই আর্টিকেল থেকে জেনে নিতে পারেন এছাড়া আজকে আমি আপনাদের সাথে আলোচনা করব কিডনির পয়েন্ট কত হলে খারাপ - কিডনির পয়েন্ট কত হলে স্বাভাবিক আজকের এই আর্টিকেলটি আপনি যদি মনোযোগ সহকারে পড়েন কিডনির পয়েন্ট কত হলে খারাপ - কিডনির পয়েন্ট কত হলে স্বাভাবিক শুধুমাত্র একটি পোস্ট থেকে জেনে নিতে পারবেন ।
কিডনির পয়েন্ট কত হলে খারাপ - কিডনির পয়েন্ট কত হলে স্বাভাবিক

এই আর্টিকেলটি আপনি মনোযোগ সহকারে পড়েন তাহলে কিডনির পয়েন্ট কত হলে খারাপ - কিডনির পয়েন্ট কত হলে স্বাভাবিক সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়লে আর কোন প্রশ্ন থাকবে না ।

কিডনির পয়েন্ট কত হলে ডায়ালাইসিস করতে হয় 

কিডনি ফাংশনের অবস্থা নির্ণয়ের জন্য সাধারণত "ক্রিয়েটিনিন লেভেল" এবং "গ্লোমেরুলার ফিন্ট্রেশন রেট (GFR)" মাপকাঠি হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

ডায়ালাইসিস সাধারণত তখন প্রয়োজন হয় যখন GFR ১৫ mL/min/1.73m² এর নিচে নেমে যায়, অর্থাৎ যখন কিডনি ফাংশনের অবস্থা "স্টেজ ৫" বা "এন্ড স্টেজরেনাল ডিজিজ (ESRD)" হয়ে যায়। তবে রোগীর উপসর্গ, ক্রিয়েটিনিন লেভেল, পটাশিয়ামের মাত্রা এবং অন্যান্য ক্লিনিকাল ফ্যাক্টরও ডায়ালাইসিসের প্রয়োজনীয়তার ক্ষেত্রে বিবেচ্য হয়।

ডায়ালাইসিসের প্রয়োজনীয়তা শুধু কিডনির পয়েন্ট বা GFR-এর উপর নির্ভর করে না; এটি রোগীর উপসর্গ এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যগত অবস্থার উপরও নির্ভর করে। সাধারণত, কিডনি যখন পর্যাপ্তভাবে কাজ করতে পারে না, তখন শরীরে বিষাক্ত পদার্থ এবং অতিরিক্ত তরল জমা হতে শুরু করে, যা বিভিন্ন ধরনের উপসর্গ সৃষ্টি করতে পারে। ডায়ালাইসিসের প্রয়োজনীয়তা তখনই আসে যখন এই উপসর্গগুলো জীবনকে ঝুঁকিতে ফেলে।

একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা জরুরি, যিনি রোগীর নির্দিষ্ট অবস্থা অনুযায়ী সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন।

কিডনির পয়েন্ট কত হলে ভালো :

কিডনি ফাংশন নির্ণয়ের জন্য সাধারণত "সিরাম ক্রিয়েটিনিন" ও "জিএফআর" (Glomerular Filtration Rate) পরীক্ষা করা হয়।

১। সিরাম ক্রিয়েটিনিন:

এর মাত্রা সাধারণত পুরুষদের জন্য 0.7 থেকে 1.3 mg/dL এবং মহিলাদের জন্য 0.6 থেকে 1.1 mg/dL এর মধ্যে ভালো বলে ধরা হয়। তবে বয়স, পেশী ভর এবং অন্যান্য ফ্যাক্টরের ওপর এর রেঞ্জ ভিন্ন হতে পারে।

২। জিএফআর (GFR):

90 বা তার বেশি (mL/ min/1.73 m²) রেটিং মানে কিডনি ফাংশন স্বাভাবিক। 60-89 এর মধ্যে থাকলে হালকা কিডনি সমস্যার ইঙ্গিত দেয়। এর চেয়ে কম হলে কিডনি সমস্যা গুরুতর হতে পারে।

কিডনি ফাংশনের মূল্যায়নে আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্যারামিটার আছে যা ডাক্তাররা ব্যবহার করে থাকেন:

১। প্রোটিনিউরিয়া (Proteinuria):

* ইউরিনে প্রোটিনের উপস্থিতি কিডনির ক্ষতির একটি সূচক। ইউরিনে অতিরিক্ত প্রোটিন থাকলে এটি কিডনি ফাংশনের অবনতির ইঙ্গিত দিতে পারে।

২। Blood Urea Nitrogen (BUN):

* রক্তে uria নাইট্রোজেনের মাত্রা কিডনির কার্যকারিতা নির্ণয়ের জন্য ইউস করা হয়। স্বাভাবিক BUN মাত্রা ৭-২০ mg/dL এর মধ্যে হয়ে থাকে। এর চেয়ে excess হলে কিডনি কার্যকারিতার সমস্যা হতে পারে।

৩। ইলেকট্রোলাইট লেভেল:

কিডনি সঠিকভাবে কাজ না করলে শরীরে সোডিয়াম, পটাসিয়াম এবং অন্যান্য ইলেকট্রোলাইটের মাত্রা অনিয়ন্ত্রিত হয়ে পড়তে পারে। ইলেকট্রোলাইট লেভেলও কিডনি ফাংশনের মূল্যায়নের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

৪। Creatinine Clearance Test:

* এই পরীক্ষায় রক্ত ও ইউরিনের ক্রিয়েটিনিন মাত্রা তুলনা করা হয়। এটি কিডনি কতটা কার্যকরীভাবে বর্জ্য বের করতে পারছে তা মূল্যায়ন করতে সাহায্য করে।

এই সকল পরীক্ষার মাধ্যমে কিডনি ফাংশনের সামগ্রিক মূল্যায়ন করা হয় এবং চিকিৎসা পরিকল্পনা নির্ধারণ করা হয়। যেকোনো ধরনের পরিবর্তন বা সমস্যার ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞের সাথে পরামর্শ করা উচিত।

কিডনির পয়েন্ট কমানোর উপায় 

কিডনি পয়েন্ট (Serum Creatinine Level) বাড়ার মানে কিডনির কার্যক্ষমতা কমে যাওয়া। এটি কমানোর জন্য কিছু সাধারণ পদক্ষেপ নেওয়া যায়, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া সবসময় গুরুত্বপূর্ণ। নিচে কিছু উপায় দেওয়া হলো:

১। স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস:

* প্রোটিনের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করুন, বিশেষ করে প্রাণীজ প্রোটিন (মাংস, ডিম) কমান। বেশি পটাশিয়াম, ফসফরাস এবং সোডিয়ামযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন।

* তাজা ফল ও সবজি খেতে পারেন, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী।

২। পর্যাপ্ত পানি পান:

* কিডনি ঠিকমতো কাজ করার জন্য পর্যাপ্ত পানি পান করা গুরুত্বপূর্ণ। তবে, যদি কিডনি ফেইলিওর হয়ে থাকে, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী পানি গ্রহণ করতে হবে।

৩। ওষুধ ও চিকিৎসা:

* চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ গ্রহণ করুন। কিছু ওষুধ কিডনি পয়েন্ট নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করতে পারে।

* হাইপারটেনশন (উচ্চ রক্তচাপ) এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখুন।

৪। জীবনধারা পরিবর্তন:

* নিয়মিত ব্যায়াম করুন, তবে অত্যধিক না। চিকিৎসকের পরামর্শমতো ব্যায়াম করুন।

* ধূমপান ও অ্যালকোহল সেবন বন্ধ করুন।

৫। নিয়মিত পরীক্ষা:

* রক্ত ও প্রস্রাব পরীক্ষা নিয়মিত করুন। কিডনি ফাংশন পর্যবেক্ষণ করতে হবে।

৬। ওজন নিয়ন্ত্রণ:

* অতিরিক্ত ওজন কিডনির উপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করতে পারে। স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখার জন্য সঠিক খাদ্যাভ্যাস ও ব্যায়াম প্রয়োজন।

৭। মানসিক চাপ কমানো:

* মানসিক চাপ কিডনি ফাংশনকে প্রভাবিত করতে পারে। নিয়মিত মেডিটেশন, যোগব্যায়াম বা শ্বাস-প্রশ্বাসের অনুশীলন মানসিক চাপ কমাতে সহায়ক হতে পারে।

৮। প্রাকৃতিক ওষুধ ও ভেষজ:

কিছু ভেষজ বা প্রাকৃতিক উপাদান কিডনি সুস্থ রাখতে সহায়তা করতে পারে, যেমন:

* পূণ্যমূল (Punarnava): এটি একটি আয়ুর্বেদিক ভেষজ যা কিডনি ফাংশন উন্নত করতে পারে।

* গোকশুর (Gokshura): এটি মূত্রনালীর সমস্যা দূর করতে সহায়ক।

* দ্রাক্ষারস (Grapeseed extract): অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে যা কিডনির স্বাস্থ্য রক্ষায় ভূমিকা রাখতে পারে। তবে, এই ধরনের ভেষজ গ্রহণের আগে অবশ্যই একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

৯। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা:

* উচ্চ রক্তচাপ কিডনির ক্ষতি করতে পারে। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিয়মিত ব্যায়াম, কম লবণযুক্ত খাদ্য এবং প্রয়োজনীয় ওষুধ সেবন করতে হবে।

১০। কিছু নির্দিষ্ট ওষুধ এড়িয়ে চলুন:

* কিছু ওষুধ, যেমন NSAIDS (ইনফ্লামেশন রোধের ওষুধ) কিডনির উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। তাই, প্রয়োজন ছাড়াই এই ধরনের ওষুধ ব্যবহার করা উচিত নয়।

১১। নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ:

* কিডনির সমস্যা থাকলে নিয়মিত চিকিৎসকের কাছে যাওয়া এবং চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, কিডনি ফাংশনের উপর কোনও সমস্যা দেখা দিলে দেরি না করে দ্রুত চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করা জরুরি। কিডনি রোগ অনেক সময় প্রাথমিক অবস্থায় নিরাময়যোগ্য হতে পারে, তাই নিয়মিত পরীক্ষার মাধ্যমে রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

ক্রিয়েটিনিন কত হলে ডায়ালাইসিস করতে হয় 


ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা ডায়ালাইসিসের প্রয়োজনীয়তা নির্ধারণের একটি ফ্যাক্টর, কিন্তু একমাত্র মাপকাঠি নয়। সাধারণত, যখন রক্তের ক্রিয়েটিনিন মাত্রা খুব বেশি হয় (যেমন ৭-১০ মিলিগ্রাম/ডেসিলিটার বা তার বেশি), তখন ডায়ালাইসিসের প্রয়োজন হতে পারে। তবে, এটি নির্ভর করে রোগীর সামগ্রিক শারীরিক অবস্থা, যেমন পটাশিয়াম লেভেল, ইউরিয়া লেভেল, শরীরে তরল ধারণ, এবং অন্যান্য উপসর্গের উপর। একজন নেফ্রোলজিস্টের সাথে পরামর্শ করা উচিৎ, যিনি রোগীর পরিস্থিতি বিবেচনা করে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন।

ডায়ালাইসিসের প্রয়োজনীয়তা কেবলমাত্র ক্রিয়েটিনিনের মাত্রার উপর নির্ভর করে না; বরং এটি কিডনি ফাংশনের সামগ্রিক অবস্থা এবং অন্যান্য ক্লিনিক্যাল ফ্যাক্টর দ্বারা নির্ধারিত হয়। ক্রিয়েটিনিন হলো কিডনির কার্যকারিতা পরিমাপের একটি সূচক। কিন্তু একজন রোগীর ডায়ালাইসিসের প্রয়োজন হতে পারে যদি তার

১। কিডনি ফাংশন হ্রাস: সাধারণত যখন গ্লোমেরুলার ফিন্ট্রেশন রেট (GFR) ১৫ মি.লি./মিনিট/১.৭৩ মি² এর কম হয়।

২৷ সিভিয়ার উপসর্গ: যেমন বমি, ক্লান্তি, ফ্লুইড ওভারলোড (যেমন, পায়ে ও ফুসফুসে পানি জমা), অথবা শ্বাসকষ্ট।

৩। সিভিয়ার উপসর্গ: যেমন বমি, ক্লান্তি, ফ্লুইড ওভারলোড (যেমন, পায়ে ও ফুসফুসে পানি জমা), অথবা শ্বাসকষ্ট।

৪। বিপজ্জনক মাত্রায় ইলেকট্রোলাইট অস্বাভাবিকতা: যেমন উচ্চ পটাশিয়াম (হাইপারক্যালেমিয়া), যা হৃদরোগের কারণ হতে পারে।

৫। মেটাবলিক অ্যাসিডোসিস: যেখানে শরীরের অ্যাসিড-ক্ষার সামঞ্জস্যতা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

৬। দ্রুত বর্ধনশীল ইউরেমিয়া: যেখানে ইউরিয়া এবং অন্যান্য বর্জ্য পদার্থের মাত্রা খুব দ্রুত বাড়তে থাকে।

তবে, ডায়ালাইসিসের সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণরূপে একজন চিকিৎসকের মূল্যায়নের উপর নির্ভর করে, যিনি রোগীর সম্পূর্ণ শারীরিক অবস্থা এবং ক্লিনিক্যাল উপসর্গগুলি বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেবেন।

কিডনির পয়েন্ট বেড়ে গেলে কি করনীয় 

কিডনির কার্যকারিতা অর্থাৎ পয়েন্ট কমে গেলে রক্তে ক্রিয়েটিনিন এবং ইউরিয়া স্তরের বৃদ্ধি ঘটে, যা কিডনির অসুস্থতার একটি নির্দেশক হতে পারে। কিডনির পয়েন্ট বা ক্রিয়েটিনিন স্তর বেড়ে গেলে নিচের কিছু পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে:

করণীয়:

১। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন:

কিডনির স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য শরীরে যথেষ্ট পরিমাণ পানি রাখা জরুরি।

২। প্রোটিনের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করুন:

খাদ্যতালিকায় প্রোটিনের পরিমাণ কমানো উচিত, কারণ অতিরিক্ত প্রোটিন কিডনির ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে।

৩। নুনের পরিমাণ কমান:

খাবারে লবণের পরিমাণ কমিয়ে ফেলুন, কারণ লবণ রক্তচাপ বৃদ্ধি করে এবং কিডনির সমস্যা আরও বাড়িয়ে দিতে পারে।

৪। রক্তচাপ এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করুন:

উচ্চ রক্তচাপ এবং ডায়াবেটিস কিডনির ক্ষতির প্রধান কারণ। নিয়মিত ঔষধ সেবন এবং জীবনধারা পরিবর্তনের মাধ্যমে এগুলো নিয়ন্ত্রণে রাখুন।

৫। ডাক্তারের পরামর্শ নিন:

কিডনি বিশেষজ্ঞের সঙ্গে পরামর্শ করুন এবং প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করান।

৬। প্রয়োজনীয় ঔষধ সেবন:

ডাক্তার প্রয়োজনমতো ঔষধ দিতে পারেন কিডনির কার্যকারিতা ঠিক রাখতে।

৭। স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস মেনে চলুন:

* ফল এবং শাকসবজি: ফাইবার সমৃদ্ধ ফল এবং শাকসবজি গ্রহণ করুন। তবে পটাশিয়াম এবং ফসফরাসের মাত্রা বেশি এমন খাবার (যেমন কলা, আলু, টমেটো) নিয়ন্ত্রণে রাখুন, বিশেষ করে যদি আপনার কিডনি সমস্যা থাকে।

* কম চর্বিযুক্ত খাবার: কম চর্বিযুক্ত এবং সুষম খাবার গ্রহণ করুন। ভাজা খাবার এবং উচ্চ ফ্যাটযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন।

৮। নিয়মিত ব্যায়াম করুন:

প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট হালকা ব্যায়াম বা হাঁটাহাঁটি করুন। এটি রক্তচাপ এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে, যা কিডনির স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।

৯। ধূমপান এবং মদ্যপান থেকে বিরত থাকুন:

ধূমপান এবং অতিরিক্ত মদ্যপান কিডনির কার্যকারিতা কমাতে পারে। এগুলি পুরোপুরি ত্যাগ করার চেষ্টা করুন।

১০। ওষুধ সেবনের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকুন:

কিছু ওষুধ (যেমন ব্যথানাশক বা NSAIDs) কিডনির জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোন ওষুধ খাবেন না।

১১। ওজন নিয়ন্ত্রণ করুন:

ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ অতিরিক্ত ওজন কিডনির ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করে।

১২। নিয়মিত কিডনি ফাংশন টেস্ট করান:

কিডনির কার্যকারিতা নিয়মিত পরীক্ষার মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করুন। এটি কিডনির সমস্যা আগে থেকেই চিহ্নিত করতে সাহায্য করে এবং সময়মতো পদক্ষেপ নিতে সহায়ক হয়।

১৩। স্ট্রেস কমান:

স্ট্রেস বা মানসিক চাপ কিডনির স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। যোগব্যায়াম, মেডিটেশন বা অন্যান্য রিল্যাক্সেশন পদ্ধতির সাহায্যে মানসিক চাপ কমানোর চেষ্টা করুন।

চিকিৎসা সংক্রান্ত পরামর্শ:

* যদি কিডনি ফাংশনের অবনতি দেখা যায়, তবে প্রাথমিক অবস্থায় ডাক্তারদের পরামর্শে ডায়ালাইসিস বা কিডনি প্রতিস্থাপনের মতো চিকিৎসার কথা বিবেচনা করতে হতে পারে।

* উচ্চমাত্রার ক্রিয়েটিনিন বা ইউরিয়া চিকিৎসার জন্য ডাক্তার প্রয়োজনীয় ঔষধ এবং জীবনধারা পরিবর্তনের পরামর্শ দেবেন।

কিডনি রোগ একটি গুরুতর সমস্যা, এবং সঠিক চিকিৎসা এবং জীবনধারা পরিবর্তনের মাধ্যমে এর অবনতি রোধ করা সম্ভব। যেকোনো সমস্যা দেখা দিলে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

কিডনির পয়েন্ট কত হলে স্বাভাবিক 

কিডনির পয়েন্ট কত হলে স্বাভাবিক হয়, তা সাধারণত ক্রিয়েটিনিন, গ্লোমেরুলার ফিন্ট্রেশন রেট (GFR), এবং ইউরিয়া লেভেলের মাধ্যমে নির্ধারণ করা হয়।

১। সিরাম ক্রিয়েটিনিন: সাধারণত পুরুষদের জন্য 0.7 থেকে 1.3 mg/dL এবং মহিলাদের জন্য 0.6 থেকে 1.1 mg/dL স্বাভাবিক বলে বিবেচিত হয়।

২। গ্লোমেরুলার ফিন্ট্রেশন রেট (GFR): সাধারণত ৯০ থেকে ১২০ mL/min/1.73m² এর মধ্যে GFR স্বাভাবিক বলে বিবেচিত হয়। GFR কমে গেলে এটি কিডনি ফাংশন কমে যাওয়ার ইঙ্গিত দেয়।

৩. ইউরিয়া: সাধারণত রক্তের ইউরিয়া নাইট্রোজেন (BUN) ৭ থেকে ২০ mg/dL স্বাভাবিক বলে গণ্য করা হয়।

ডায়ালাইসিস করতে কত টাকা লাগে 

বাংলাদেশে ডায়ালাইসিসের খরচ বিভিন্ন হাসপাতাল এবং ডায়ালাইসিস সেন্টারের উপর নির্ভর করে। সাধারণত, প্রতি সেশন ডায়ালাইসিসের খরচ ২০০০ থেকে ৫০০০ টাকার মধ্যে হতে পারে। তবে সরকারি হাসপাতালগুলোতে এই খরচ কিছুটা কম হতে পারে, এবং বেসরকারি হাসপাতাল বা ডায়ালাইসিস সেন্টারগুলোতে খরচ বেশি হতে পারে।

পেরিটোনিয়াল ডায়ালাইসিসের খরচ:

পেরিটোনিয়াল ডায়ালাইসিস (PD) একটি বিকল্প পদ্ধতি যেখানে রোগীর পেটের ভিতরে একটি ক্যাথেটারের মাধ্যমে ডায়ালাইসিস করা হয়। পিডি সাধারণত ঘরে করা যায়, তবে এর জন্য প্রতিমাসে ৩০,০০০ থেকে ৭০,০০০ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে, কারণ এতে ডায়ালাইসিসের জন্য ব্যবহৃত দ্রবণের দাম অন্তর্ভুক্ত থাকে।

ডায়ালাইসিসের খরচ নির্ভর করে কিছু নির্দিষ্ট ফ্যাক্টরের উপর:

১। হাসপাতাল বা ডায়ালাইসিস সেন্টারের ধরন:

সরকারি হাসপাতালগুলোতে সাধারণত খরচ কম হয়। কিছু সরকারি হাসপাতাল বা স্বাস্থ্য সংস্থা বিনামূল্যেও ডায়ালাইসিস সেবা দিয়ে থাকে। বেসরকারি হাসপাতালে খরচ তুলনামূলকভাবে বেশি হতে পারে, যা ৪,০০০ থেকে ৮,০০০ টাকা বা তারও বেশি হতে পারে।

২। ডায়ালাইসিসের প্রকার:

হেমোডায়ালাইসিস (মেশিনের মাধ্যমে রক্ত পরিষ্কার) এবং পেরিটোনিয়াল ডায়ালাইসিস (পেটের মধ্যে ক্যাথেটারের মাধ্যমে) - এই দুটি প্রধান ধরনের ডায়ালাইসিসের খরচ আলাদা হতে পারে। হেমোডায়ালাইসিসের খরচ সাধারণত বেশি হয়।

৩। প্রয়োজনীয়তা ও ফ্রিকোয়েন্সি:

বেশিরভাগ রোগীকে সপ্তাহে দুই থেকে তিন বার ডায়ালাইসিস করতে হয়। এটি মাসিক খরচ বাড়াতে পারে। খরচের মধ্যে ডায়ালাইসিস সেশনের সংখ্যা এবং আনুষঙ্গিক চিকিৎসা অন্তর্ভুক্ত থাকে।

৪। অন্যান্য আনুষঙ্গিক খরচ:

যেমন : মেডিসিন, টেস্ট, ডাক্তার ফি, এবং যাতায়াত খরচ।

৫। স্বাস্থ্য বীমা বা অন্য সাহায্য:

যদি স্বাস্থ্য বীমা বা সরকারি কোন প্রকল্পের আওতায় থাকেন, তবে ডায়ালাইসিসের খরচের একটি অংশ বা পুরো খরচ বীমার আওতায় থাকতে পারে।

নির্দিষ্ট ভাবে ডায়ালাইসিসের খরচ জানতে আপনার কাছের হাসপাতাল অথবা ডায়ালাইসিস সেন্টারে যোগাযোগ করতে পারেন।

কিডনির পয়েন্ট কত হলে খারাপ 

কিডনির কার্যক্ষমতা নির্ধারণের জন্য সাধারণত দুটি প্রধান প্যারামিটার ব্যবহৃত হয়, সিরাম ক্রিয়েটিনিন লেভেল এবং গ্লোমেরুলার ফিন্ট্রেশন রেট (GFR)।

১। সিরাম ক্রিয়েটিনিন (Serum Creatinine) :

একজন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের জন্য ক্রিয়েটিনিন লেভেল সাধারণত 0.7 থেকে 1.3 মিলিগ্রাম/ডেসিলিটার এবং মহিলাদের জন্য 0.6 থেকে 1.1 মিলিগ্রাম/ডেসিলিটার মধ্যে থাকা উচিত।

ক্রিয়েটিনিন লেভেল যদি বেশি হয়, তাহলে তা কিডনির কার্যক্ষমতা কমে যাওয়ার ইঙ্গিত দিতে পারে।

২। গ্লোমেরুলার ফিন্ট্রেশন রেট (GFR) :

GFR 90 বা তার বেশি হলে কিডনি স্বাভাবিকভাবে কাজ করছে বলে মনে করা হয়।

GFR যদি 60-89 হয়, তবে কিডনির কিছু ক্ষতি হতে পারে, তবে সাধারণত কিডনি স্বাভাবিকভাবে কাজ করে। GFR 30-59 হলে মাঝারি থেকে গুরুতর কিডনি রোগের ইঙ্গিত দেয়।

GFR 15-29 হলে কিডনি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, যা ডায়ালাইসিস বা কিডনি প্রতিস্থাপনের প্রয়োজন হতে পারে। GFR যদি 15 এর নিচে হয়, তবে এটি কিডনি ব্যর্থতার নির্দেশ করে।

কিডনির স্বাস্থ্য এবং কার্যক্ষমতা মূল্যায়নের ক্ষেত্রে আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এবং প্যারামিটার বিবেচনা করা হয়:

১। ব্লাড ইউরিয়া নাইট্রোজেন (BUN) :

* BUN লেভেল কিডনি কতটা ভালোভাবে প্রোটিন মেটাবলিজমের বর্জ্য পণ্যগুলি ফিল্টার করতে পারছে তা বোঝাতে সাহায্য করে। প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য স্বাভাবিক BUN লেভেল ৭ থেকে ২০ মিলিগ্রাম/ডেসিলিটার । যদি BUN লেভেল বেশি হয়, তাহলে কিডনির কার্যক্ষমতা কমে যেতে পারে।

২। ক্রিয়েটিনিন ক্লিয়ারেন্স (Creatinine Clearance) :

*এটি GFR নির্ণয়ের জন্য ব্যবহৃত হয় এবং ২৪ ঘণ্টার ইউরিন স্যাম্পল এবং সিরাম ক্রিয়েটিনিনের ভিত্তিতে নির্ণয় করা হয়।স্বাভাবিক ক্রিয়েটিনিন ক্লিয়ারেন্স পুরুষদের জন্য ৯৭-১৩৭ মিলিলিটার/মিনিট এবং মহিলাদের জন্য ৮৮-১২৮ মিলিলিটার/মিনিট। এর মান কমে গেলে কিডনির কার্যক্ষমতা হ্রাস পাচ্ছে বলে বোঝায়।

৩. প্রোটিনিউরিয়া (Proteinuria) :

* ইউরিনে প্রোটিনের উপস্থিতি কিডনি সমস্যার প্রাথমিক লক্ষণ হতে পারে। - সাধারণত, ইউরিনে খুব কম পরিমাণ প্রোটিন থাকে, কিন্তু যদি এর পরিমাণ বেড়ে যায় তবে তা কিডনি সমস্যার ইঙ্গিত দিতে পারে।

*ডাক্তাররা ইউরিন টেস্টের মাধ্যমে প্রোটিনের মাত্রা নির্ণয় করে কিডনির অবস্থা মূল্যায়ন করতে পারেন।

এসব লক্ষণ দেখা দিলে বোঝা যাবে কিডনির পয়েন্ট খারাপ অবস্থায় আছে।

কিডনির পয়েন্ট বেশি হলে কি হয় :

কিডনির "পয়েন্ট" বলতে বোঝানো হয়েছে যে ক্রিয়েটিনিন লেভেল, BUN লেভেল, বা অন্যান্য প্যারামিটারগুলো বেশি হলে কী হতে পারে, তাহলে তার মানে কিডনির কার্যক্ষমতা কমে যাচ্ছে বা কিডনি সঠিকভাবে কাজ করতে পারছে না। এর ফলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে:

১। কিডনি রোগ (Chronic Kidney Disease বা CKD) :

* কিডনির বিভিন্ন প্যারামিটার যদি দীর্ঘ সময় ধরে বেশি থাকে, তবে তা ক্রনিক কিডনি রোগের (CKD) লক্ষণ হতে পারে। CKD ধীরে ধীরে কিডনির কার্যক্ষমতা কমিয়ে দেয় এবং সময়ের সাথে সাথে এটি কিডনি ব্যর্থতার দিকে নিয়ে যেতে পারে।

২। কিডনি ব্যর্থতা (Kidney Failure) :

যখন কিডনি ঠিকমতো রক্ত ফিল্টার করতে পারে না, তখন শরীরে বিষাক্ত পদার্থ জমা হতে শুরু করে। এর ফলে কিডনি ব্যর্থতা (End-Stage Renal Disease বা ESRD) হতে পারে, যা ডায়ালাইসিস বা কিডনি প্রতিস্থাপনের প্রয়োজন করতে পারে।

৩। ইলেকট্রোলাইট ইম্ব্যালান্স (Electrolyte Imbalance) :

কিডনি ইলেকট্রোলাইটস নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে শরীরে সোডিয়াম, পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম ইত্যাদির মাত্রা অস্বাভাবিক হয়ে যায়। এটি হার্ট, পেশি, এবং স্নায়ুর কার্যক্রমে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।

৪। রক্তচাপ বৃদ্ধি (Hypertension) :

* কিডনির কার্যক্ষমতা কমে গেলে রক্তচাপ বেড়ে যায়। উচ্চ রক্তচাপ আবার কিডনির ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে, যা কিডনির আরও ক্ষতি করতে পারে।

৫। ইউরেমিয়া (Uremia) :

* কিডনি সঠিকভাবে ফিল্টার করতে না পারলে রক্তে ইউরিয়া এবং অন্যান্য বর্জ্য পদার্থ জমা হয়। এর ফলে ইউরেমিয়া নামে একটি অবস্থার সৃষ্টি হয়, যা খুবই গুরুতর এবং চিকিৎসার অভাবে প্রাণঘাতী হতে পারে।

৬। অ্যানিমিয়া (Anemia) :

* কিডনি রোগের ফলে ইরিথ্রোপয়েটিন (Erythropoietin) নামক হরমোনের উৎপাদন কমে যায়, যা রক্তে লোহিত কণিকার পরিমাণ কমিয়ে দেয়। এর ফলে অ্যানিমিয়া হতে পারে, যার কারণে ক্লান্তি, দুর্বলতা, এবং শ্বাসকষ্ট হতে পারে।

৭। হাড়ের সমস্যা (Bone Problems) :

* কিডনি সঠিকভাবে ক্যালসিয়াম এবং ফসফরাস নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে হাড় দুর্বল হয়ে যেতে পারে, যা ফ্র্যাকচার এবং অন্যান্য হাড়ের সমস্যার ঝুঁকি বাড়ায়।

৮। হৃদরোগ (Heart Disease) :

কিডনি রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের হৃদরোগের ঝুঁকি বেশি থাকে। কিডনির কার্যক্ষমতা কমে গেলে হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক, এবং অন্যান্য কার্ডিওভাসকুলার সমস্যার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।

সুতরাং, কিডনির প্যারামিটারগুলো যদি বেশি থাকে, তবে এটি অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে নেওয়া উচিত এবং দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। চিকিৎসার মাধ্যমে কিডনির ক্ষতি কমানো বা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হতে পারে।

শেষ কথা:কিডনির পয়েন্ট কত হলে খারাপ - কিডনির পয়েন্ট কত হলে স্বাভাবিক

পোষ্টের মাধ্যমে আপনারা কিডনির পয়েন্ট কত হলে খারাপ - কিডনির পয়েন্ট কত হলে স্বাভাবিক ক্তি জানতে পারলেন । মনোযোগ সহকারে পড়ে থাকেন তাহলে আশা করি আপনার কোন সমস্যা হওয়ার কথা না কিডনির পয়েন্ট কত হলে খারাপ - কিডনির পয়েন্ট কত হলে স্বাভাবিক সম্পর্কে জানতে পরলেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url